দুনিয়ার সবচেয়ে সহজ কাজ হচ্ছে এক্সিউজ বা অজুহাত। কিন্তু এটা দিতেও নিজেকে ক্রিয়েটিভ হওয়া লাগে। এমন এক্সিউজ দিতে হয় যেন, যাকে দিচ্ছি সে সন্তুষ্ট হয়। মাঝে মাঝে নিজেকেও এক্সিউজ দিতে হয়, সেক্ষেত্রে নিজেকেও নিজের এক্সিউজ দিয়ে সন্তুষ্ট করতে হয়।
কিন্তু এক্সিউজ হচ্ছে কিছুটা মাস্টাবেশনের মতো। একটা সাময়িক সুখ পাবেন, কিন্তু ঘোর কেটে গেলে পরাজিত, লুজার মনে হবে, বাজে অনুভূতি হবে।
কারণ, আপনি যখন এক্সিউজ দিয়ে থাকেন, তখন কোন একটা কিছু না করার জন্যই দিয়ে থাকেন। আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একিউজ দিয়ে থাকি কোন একটা ভালো কাজ না করার জন্য। সুতরাং, এক্সিউজ সামনে আসা মানেই অপরপক্ষে আরও একটি বিষয় অবধারিতভাবে আছে, সেই করতে না চাওয়া কাজটা।
যখনই ভালো লাগে না কোনো একটা কাজ করতে, সাথে সাথে এক্সকিউজ। জিম করতে ভালো লাগছে না- এক্সকিউজ, পড়তে ইচ্ছে করছে না- এক্সকিউজ, কাজ করতে ইচ্ছে করছে না- এক্সকিউজ, দরকারী জায়গায় যেতে ইচ্ছে করছে না- এক্সকিউজ; এর যেন শেষ নেই।
খেয়াল করে দেখবেন, যে সময়ে আপনি এক্সকিউজ দিয়ে কাজটি থেকে নিজেকে বিরত রাখছেন, ঠিক একই সময়ে অন্য কেউ সেই একই কাজ করে চলেছে। হয়তো তারও ইচ্ছে হচ্ছিলো না, তবুও সে এক্সকিউজ না দিয়ে কাজের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। আপনি এক্সকিউজ দিয়ে হয়তো মাস খানিক কাজ থেকে দূরে থাকতে পারছেন, এরপর ঠিকই আবার ফেলে রাখা কাজটির কথা মনে হবেই। আর ঠিক তখনই খেয়াল করবেন, এই মাসে অপর ব্যক্তিটি অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে। আপনার খারাপ লাগা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। হয়তো হতাশ হবেন এবং হতাশার ধারাবাহিকতা রক্ষা করে একসময় বিষন্নতায় ভুগতে থাকবেন।
হয়তো বিষয়টার সাথে অনেকেই রিলেইট করতে পারবেন। অন্তত আমি নিজেকে রিলেইট করতে পারি, পারি বলেই লেখাটা লিখতে পারছি। ছোট্ট এই জীবনে যত এক্সকিউজ দিয়েছি, এর ২৫%ও যদি না দিতাম, তাহলে জীবনটা অন্যভাবে সাজানো থাকতে পারতো। হয়তো আপনারটাও!
আমরা সবাই সফল হতে চাই, নিজের স্বপ্নের মত। আর সফল হওয়ার এই সফরে আমাদের হাতে থাকে দু’টি মাত্র অপশন। এক- এক্সকিউজ দিয়ে নিজেকে কম্বলের নিচে রাখা, এবং দুই- এক্সকিউজকে কিক দিয়ে কম্বলের নিচ থেকে বের হয়ে, করতে না চাওয়া কাজটা শুরু করে দেয়া। জাস্ট দুটো মাত্র অপশন থেকে যেকোনো একটি অপশন নিজের করে নিলেই আপনার জীবনের গতিপথ নির্ধারিত হয়ে যাবে। এক্সকিউজ থেকে আপনি যত দূরে থাকতে পারছেন, সফলতা ঠিক ততটাই আপনার কাছে অবস্থান করছে।
সিদ্ধান্ত আপনার!

