ইদানিং শুনি সব ফোনে ব্যাকডোর থাকে। আজকে একটা বিয়ে খেতে এসেছি, এই কমিউনিটি সেন্টারেও একটা ব্যাকডোর আছে। আমি ব্যাকডোরে বসে আছি। ভেতরে হট্টগোল দেখে ভয়ে এখানে এসে সাময়িক আশ্রয় নিয়েছি, বেশি বেগতিক দেখলে চট করে ভাগবো।
কপালের ফের! দেখি বর দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে ব্যাকডোরে আসছে। ভাবছি, ব্যাটা তোর আবার এখানে কী! আজ তো তোর দিন!!
-পোলাটা হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বললো, ভাই আমারে বাঁচান। বিরাট ঝামেলায় পড়সি।
-আরে বিয়েতে কাবিন নিয়ে ঝামেলা একটা জাতীয় ঝামেলা। নিজেরা মিটায়ে নেন। আর আমারে কেউ চেনেনা, আমি ক্যাম্নে মিটাবো। যান, ভেতরে যান, মুরুব্বিরা মিটমাট করে দিবে।
-ভাই সমস্যা কাবিন নিয়ে না। আর আপনারে আমি চিনি, আপনি ফেইসবুকে যেসব ছাইপাস লেখেন সেসব আমি পড়ি।
-(এই কথা শোনার পর আমার প্রতিক্রিয়া কী হওয়া উচিৎ তা আমার আপাতত জানা নেই।) বলেন কী সমস্যায় পড়েছেন?
– ভাই, এটা আমার লাভ ম্যারেজ, কিন্তু স্টেইজে যে মাইয়ারে কনে হিসেবে আনসে, আমিতো চিনতেসি না। আমি নিশ্চিত কোন উল্টাপাল্টা হইতেসে আমার সাথে। প্লিজ ভাই, আপনি আমারে একটু হেল্প করেন।
– আপনার প্রেমিকার কোন ছবি আছে আপনার কাছে?
– আছে
– এখন যে কনে হিসেবে বসে আছে তার ছবি আছে?
– নাই, তবে হোয়্যাটসাপে আনায়ে নিতে পারবো, স্টেইজের সামনে আমার বান্ধবী বসে আছে, ও দিবে।
– কোন পার্লার থেকে সেজেছে জানেন?
– জানি, মিরপুর ১১ এর ‘জানেমান’ পার্লার থেকে। মেট্রো স্টেশনের পাশেই।
– তাইলে চলেন ওখানেই যায়, আর ছবিটা আনায়ে নেন।
আমি ছেলেটাকে নিয়ে গেলাম ‘জানেমান’ পার্লারে। গেইটে গিয়ে ছেলেটার প্রেমিকার ছবি দেখিয়ে জানতে চাইলাম – এই মেয়েটা কি এখানে সাজতে এসেছিলো?
ওরা বললো- হ্যাঁ, কোন সমস্যা হয়েছে কি?
– না, তেমন কিছু না। দেরি হচ্ছে দেখে খোঁজ নিতে এলাম।
– বলেন কি! ওই আপু তো ঘন্টাখানেক আগেই সাজুগুজু করে চলে গেলেন!
– সাজানোর পর কোন ছবি তুলে থাকলে একটু দেখাবেন?
মেয়েটি তার ফোনে তোলা কয়েকটি ছবি দেখালো। আমিও বর ছেলেটার ফোনে আসা ছবির সাথে মিলিয়ে ওকে নিশ্চিত করলাম।
পার্লারের মেয়েটাকে ধন্যবাদ দিয়ে বেরিয়ে এলাম।ছেলেটা দুশ্চিন্তা আর খুশির মাঝখানে অবস্থান করছে। আমি ওকে স্টেইজে উঠিয়ে দিয়ে বেরিয়ে এলাম।
আজ আর বিয়ে খাবো না। মিরপুরের স্ট্রিটফুড খেয়ে বাসায় ফিরবো।
আহারে বিউটি পার্লার, ভিঞ্চি সাহেব বেঁচে থাকলে আজ হার্ট ফাউন্ডেশনে এডমিশন নিতেন।