জুলি আর তুলি দুই বোন, পিঠাপিঠি।
বড়বোন জুলিকে পদে পদে বোকা বানানোর কায়দা তুলি এত অসম্ভব রকমের ভালোভাবে আয়ত্ত করেছে যে, মাঝে মাঝে ওদের মা মনে মনে বলেই বসে – তুলি নামকরণ সার্থক হয়েছে!
তুলি অবশ্য মনে করেনা সে তার বোনকে বোকা বানায়। তার মতে এটা হচ্ছে ‘দ্য আর্ট অব মিসগাইডিং’। এটা শিল্পচর্চা, আর এই কাজে আপা একটু আধটু হেল্প করবে এটাই বড়বোন হিসেবে ওর দায়িত্ব!
শীতকাল। বাসায় ভাপাপিঠা হয়েছে। জুলি যথারীতি বইয়ের মধ্যে ডুবে আছে। নাজিম উদ্দিনের নতুন থ্রিলার বইটা পড়ছে এখন।
আর তুলি পিঠা সাবাড় করছে, কিচেন থেকে ডাইনিং অবধি নেয়ার সুযোগ মিলছেনা।
মা তুলিকে তাগাদা দিলো- জুলিকে বল পিঠা খেয়ে যেতে।
তুলি গিয়ে জিজ্ঞাসা করলো- এই আপা মা খেতে ডাকছে আয়।
জুলি বই থেকে মুখ না তুলেই বললো- আমি খেয়েছি, এখন আর খাবোনা, যা।
তুলি এসে মাকে রিপোর্ট করলো – আপা খেয়েছে আর খাবেনা। তাহলে বাটিতে রাখা পিঠাগুলো আমি খেলাম।
-হতচ্ছাড়া, তোকে যা বলতে বললাম তাই বল গিয়ে। পিঠা খেয়ে যেতে বল জুলিকে।
তুলি আবার গিয়ে জুলিকে বললো – আপা মা পিঠা বানালে কি পড়া শেষে তুই খাবি?
জুলি বললো – খাবোনে, যা এখন।
তুলি এবার মাকে বললো, আপা পড়া শেষে পিঠা খাবে, আমি খাই বাটির গুলো?
মা জানে, তুলির হাত থেকে পিঠার রেহাই নেই। বাটি এগিয়ে দিলো তুলির দিকে। আরেকটি প্লেটে পিঠা নিয়ে জুলির ঘরে এগিয়ে গেলো, কারণ মা নিশ্চিত তুলি জুলিকে শেষতক পিঠার কথা বললেও ভাপা পিঠার কথা বলেই নি।
তুলি পিঠার বাটি হাতে নিয়ে বড়সড় চোখ করে মায়ের গতিপথে তাকিয়ে ভাবতে লাগলো- মা এতগুলো পিঠা জমালো কখন, কীভাবে!!!
জুলি আর তুলি
সেলিম হোসেন
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪